টেলি মার্কেটিং কি | টেলি মার্কেটিং এর কাজ কি (What is Telemarketing in bengali)

বর্তমান সময়ে আমরা ডিজিটাল মার্কেটিং সম্পর্কে অনেক কিছু জানি। তবে যদি আপনি নিজেকে একজন দক্ষ মার্কেটার হিসেবে গড়ে তুলতে চান।

টেলি মার্কেটিং কি | টেলি মার্কেটিং এর কাজ কি (What is Telemarketing in bengali)
টেলি মার্কেটিং কি

তাহলে অবশ্যই আপনাকে অন্যান্য মার্কেটিং গুলো সম্পর্কেও জানতে হবে। আর তাদের মধ্যে অন্যতম হলো, টেলি মার্কেটিং। 

টেলিমার্কেটিং হল একটি কেনাকাটার কৌশল যেখানে একজন বিক্রয় প্রতিনিধি বা টেলি সেলসপার্সন সম্ভাব্য গ্রাহকদের সাথে টেলিফোনে যোগাযোগ করে।

এটি একটি কার্যকর উপায় হতে পারে নতুন গ্রাহকদের আকর্ষণ করা, প্রাপ্ত গ্রাহকদের সাথে সম্পর্ক গড়ে তোলা এবং প্রডাক্ট গুলি বিক্রয় করা।

তো এই টেলিমার্কেটিং কাকে বলে, টেলে মার্কেটিং এর কাজ কি এবং কিভাবে টেলিমার্কেটিং করতে হয়।

আজকের আলোচনা তে আপনাকে সে সম্পর্কে সঠিক ধারনা দেওয়ার চেষ্টা করবো।

আর আপনি যদি এই মার্কেটিং সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে চান। তাহলে নিচের আলোচিত আলোচনায় চোখ রাখুন। 

টেলি মার্কেটিং কি (What is Telemarketing in bengali)

সবার শুরুতে আমাদের জানতে হবে যে, টেলি মার্কেটিং মানে কি। কারণ, আপনি যখন এই বিষয়টি সম্পর্কে জানতে পারবেন। তখন আপনার পরবর্তী আলোচনা গুলো বুঝতে সুবিধা হবে।

তো সহজ কথায় বলতে গেলে টেলিমার্কেটিং হলো অন্যতম একটি কেনাকাটা করার প্রক্রিয়া। যার মাধ্যমে একজন বিক্রেতা  টেলিফোনে সরাসরি তার ক্রেতার সাথে যোগাযোগ করে।

আপনি আরোও দেখতে পারেন…

যার মাধ্যমে ক্রেতাদের নিকট তাদের বিভিন্ন পন্য সম্পর্কে জানিয়ে দেওয়া যায়। এর পাশাপাশি একজন ক্রেতার নিকট নির্দিষ্ট পন্য কেনার প্রতি আগ্রহ তৈরি করা যায়। 

তবে এখন আপনার মনে প্রশ্ন জাগতে পারে যে, এটা তো ডিজিটাল মার্কেটিং এর মাধ্যমেও করা সম্ভব। তাহলে আমরা কেন এই প্রক্রিয়াকে টেলি মার্কেটিং বলবো।

তো যদি আপনার মনে এমন প্রশ্ন জেগে থাকে, তাহলে শুনুন…….

টেলিমার্কেটিং ডিজিটাল মার্কেটিং এর অংশ নয়। কেননা, যখন আপনি টেলিমার্কেটিং করবেন। তখন আপনাকে ক্রেতাদের নিকট টেলিফোন এর মাধ্যমে যোগাযোগ করতে হবে।

আর যেহুতু এই মার্কেটিং এর কাজটি টেলিফোন বা কল করার মাধ্যমে করা হয়। সেই কারণেই এই মার্কেটিং কে বলা হয়, টেলি মার্কেটিং। 

টেলি মার্কেটিং এর কাজ কি?

উপরের আলোচনা থেকে আমরা জানতে পারলাম টেলি মার্কেটিং কি । তো এবার আমাদের এই টেলিমার্কেটিং এর কাজের প্রক্রিয়া সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে হবে।

অর্থ্যাৎ অন্যান্য মার্কেটিং এর মতো টেলি মার্কেটিং আসলে কিভাবে কাজ করে। সেই কাজের প্রক্রিয়া টি নিয়ে এবার বিষদভাবে আলোচনা করবো।

মনে করুন, আপনার নির্দিষ্ট একটি কোম্পানি আছে যেখানে আপনার কোনো প্রোডাক্ট আছে। তো এখন আপনি চাচ্ছেন টেলি মার্কেটিং এর মাধ্যমে আপনার কোম্পানির সেই প্রোডাক্ট গুলোকে সেল করবেন।

এখন আপনার সেই প্রোডাক্ট গুলোর ক্রেতার নিকট আপনি কল দিলেন। কল দেওয়ার পর আপনি তাদের সাথে আপনার প্রোডাক্ট এর বিষয়ে কথা বললেন।

তাদেরকে আপনি ভালো ভাবে বুঝিয়ে দিলেন যে, আপনার প্রোডাক্ট এর সুবিধা গুলো কি কি। এরফলে ক্রেতারা আপনার প্রোডাক্ট সম্পর্কে জানতে পারবে।

আর যদি আপনি ক্রেতাদের নিকট বিশ্বস্ততা অর্জন করতে পারেন। তাহলে তারা আপনার প্রোডাক্ট কেনার জন্য আগ্রহী হবে।

কিন্তুু যদি তারা আপনার প্রোডাক্ট কিনতে আগ্রহী না হয়। তারপরও তারা আপনার কোম্পানি ও প্রোডাক্ট সম্পর্কে জানতে পারবে।

মূলত এভাবেই টেলি মার্কেটিং এর কাজ করা হয়ে থাকে। 

টেলিমার্কেটিং প্রথম কবে চালু হয়?

Telemarketing কি সেটি জানার পাশাপাশি আমাদের আরো একটি বিষয় জেনে নিতে হবে।

সেটি হলো, টেলি মার্কেটিং প্রথম কবে চালু হয়।

তো ধারনা করা হয় যে, 1970 সালে সর্বপ্রথম টেলি মার্কেটিং এর যাত্রা শুরু হয়েছিলো। কেননা, সেই সময় পৃথিবী এতোটা উন্নত ছিলোনা।

যার কারণে কোম্পানিদের প্রোডাক্ট প্রচার করার অন্যতম মাধ্যম ছিলো টেলিমার্কেটিং।

তবে যাত্রা শুরু করার অনেক বছর পর টেলিমার্কেটিং জনপ্রিয় হয়। কেননা, সেই সময়ে রেকডিং প্রযুক্তির ব্যবহার টেলিমার্কেটিং কে আরো বেশি জনপ্রিয় করে তুলেছিলো।

এভাবে সময়ের সাথে সাথে টেলি মার্কেটিং এর মধ্যে আরো নতুন নতুন প্রযুক্তির সমন্বয় হয়েছে।

আর সেই সময়ে বিশ্বের বিভিন্ন কোম্পানি তাদের প্রোডাক্ট প্রচারের জন্য টেলিমার্কেটিং এর প্রতি আগ্রহী হয়ে পড়েছিলো।

আর ১৯৯০ থেকে ২০০০ সাল পর্যন্ত টেলি মার্কেটিং এর মধ্যে আরো নতুন নতুন কাজের প্রক্রিয়া যুক্ত করা হয়েছিলো।

যার ফলে কোম্পানির মালিকেরা টেলিমার্কেটিং কে কেনাকাটার এর জন্য অন্যতম একটি কৌশল বলে ধরে নিয়েছে। আর টেলিমার্কেটিং এর সেই জনপ্রিয়তা এখন পর্যন্ত টিকে আছে। 

২০২৩ সালে, টেলিমার্কেটিং এখনও একটি জনপ্রিয় কেনাকেটার কৌশল। বিশ্বব্যাপী টেলিমার্কেটিং শিল্পের আকার প্রায় ১ ট্রিলিয়ন মার্কিন ডলার।

কিভাবে টেলি মার্কেটিং করতে হয়?

অন্যান্য মার্কেটিং এর ক্ষেত্রে যেমন আপনাকে নির্দিষ্ট কিছু ধাপ অতিক্রম করে কাজ করতে হয়। ঠিক তেমনি ভাবে টেলিমার্কেটিং করার ক্ষেত্রেও আপনাকে বেশ কিছু নিয়ম ফলো করতে হবে।

আর মার্কেটিং করার সময় আপনি যতো নতুন নতুন আইডিয়া বের করতে পারবেন। আপনার ঠিক ততোই সফলতা পাওয়ার সম্ভাবনা থাকবে।

তো আপনি যেন টেলি মার্কেটিং করার সময় সফলতা পান। সে কারণে এবার আমি আপনাকে নতুন আইডিয়া যুক্ত কিছু নিয়ম শেয়ার করবো।

আপনি চাইলে এই নিয়ম গুলো ফলো করার মাধ্যমে টেলি মার্কেটিং এর কাজ করতে পারবেন। যেমন, 

০১ – ক্রেতা বাছাই করা

যখন আপনি টেলিমার্কেটিং করতে চাইবেন, তখন সবার আগে আপনার প্রোডাক্ট এর দিকে নজর দিতে হবে।

অর্থ্যাৎ আপনার কাছে যে প্রোডাক্ট আছে, সেগুলো কোন ধরনের ক্রেতা কিনতে পারবে। সেই ক্রেতাদের আগে খুজে নিতে হবে।

আর যখন আপনি আপনার প্রোডাক্ট সেল করার জন্য ক্রেতা বাছাই করবেন। তখন আপনাকে ক্রেতার বিভিন্ন বিষয়ের দিকে লক্ষ্য রাখতে হবে।

যেমন, আপনার ক্রেতার অবস্থান, বয়স, ক্রয় ক্ষমতা ইত্যাদি বৈশিষ্ট্য গুলোর দিকে যথেষ্ট নজর দিতে হবে।

কেননা, আপনি যতো সুক্ষভাবে ক্রেতাদের যাচাই করতে পারবেন। আপনার প্রোডাক্ট সেল করার জন্য ঠিক ততো বেশি আইডিয়া বের করতে পারবেন।

তাই সবার প্রথমে আপনাকে আপনার প্রোডাক্টের সঠিক ক্রেতার বৈশিষ্ট্য বিবেচনা করতে হবে। 

০২- ক্রেতার সাথে কথপোকথন সংক্ষিপ্ত ও  বিশ্লেষন

টেলিমার্কেটিং করার সময় আপনাকে অবশ্যই ক্রেতাদের কল দিতে হবে। তারপর আপনার প্রথম ও প্রধান কাজ হবে সাবলীল ভাবে আপনার প্রোডাক্ট এর বিস্তারিত বলার।

কিন্তুু যখন আপনি ক্রেতার নিকট কল দিবেন। তখন আপনাকে বেশ কিছু বিষয়ের দিকে খেয়াল রাখতে হবে। যেমন,

  1. আপনার কথা বলার ভঙ্গি মাধুর্যপূর্ণ হতে হবে। 
  2. সাবলীল ভাবে কথা বলতে হবে। 
  3. আপনার কথা খুব সংক্ষিপ্ত করতে হবে। 
  4. অহেতুক কথা বলা যাবেনা। 
  5. ক্রেতাদের কল করে বিরক্ত করা যাবেনা। 
  6. সংক্ষিপ্ত পরিসরে আপনার প্রোডাক্টের সুবিধা গুলো বলতে হবে।

টেলি মার্কেটিং করার সময় একটা বিষয় বেশ ভালো করে খেয়াল রাখবেন। ক্রেতাদের সময়ের যথেষ্ট মূল্য আছে, আর কেউ আপনার কল ধরে কথা বলার জন্য বসে নেই।

তাই আপনাকে তাদের সাথে কথা বলার জন্য আগে থেকেই যথেষ্ট প্রস্তুতি নিতে হবে। আর কেন আপনি তাকে কল দিয়েছে সেটি কথা বলার শুরুতে পরিস্কার করতে হবে। 

০৩ – গ্রাহকদের পরিস্থিতি বোঝার চেষ্টা করুন  

আপনি যখন কোনো একজন ক্রেতাকে আপনার প্রোডাক্ট সম্পর্কে বিস্তারিত বলবেন। তখন আপনাকে তাদের পরিস্থিতি সম্পর্কে বুঝতে হবে।

আপনাকে যথেষ্ট বিচেক্ষনতার মাধ্যমে অনুমান করতে হবে যে, তারা আদৌ আপনার প্রোডাক্ট এর প্রতি আগ্রহী কিনা।

এর পাশাপাশি আপনি যে তাদেরকে আপনার প্রোডাক্ট সম্পর্কে বলছেন। তারা আপনার এই কথা গুলো শুনতে আগ্রহী কিনা।

উক্ত বিষয় গুলো আপনাকে কল দিয়ে কথা বলার সময় নিজে থেকে অনুমান করে নিতে হবে।

কেননা, টেলি মার্কেটিং করার সময় সর্বদা একটা কথা মাথায় রাখবেন। আপনার কল দেওয়ার কারণে ক্রেতাদের কখনই বিরক্ত করা যাবেনা। 

০৪ – ক্রেতাদের আকৃষ্ট করুন

প্রথমবার যখন আপনি কোনো ক্রেতাকে কল দিবেন। তখন তাদের সম্পর্কে প্রয়োজনীয় তথ্য গুলো জানার চেষ্টা করবেন।

তবে সেই সকল তথ্য গুলোর মধ্যে অন্যতম হলো, ক্রেতার নাম ও ক্রেতার অবস্থান।

কেননা, যখন আপনি কল দেওয়ার পর ক্রেতার নাম ধরে সম্বোধন করবেন। তখন আপনার কথার প্রতি ক্রেতার একটা আলাদা আগ্রহ তৈরি হবে।

এর পাশাপাশি আপনি যদি ক্রেতার বর্তমান অবস্থান সম্পর্কে জানতে পারেন। তাহলে আপনি তাদের অবস্থান ভেদে প্রোডাক্ট এর বাড়তি সুবিধা উল্লেখ করতে পারবেন।

কেননা, আপনার মূল কাজ হলো টেলি মার্কেটিং এর মাধ্যমে আপনার প্রোডাক্ট বা কোম্পানির প্রচার করা। সেইসাথে আপনার কোম্পানি তে থাকা প্রোডাক্ট এর সেল বৃদ্ধি করা। 

০৫ – মার্কেটিং এর ফলাফল যাচাই করুন 

এটি হলো টেলি মার্কেটিং করার সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ একটি কাজ। যেখানে আপনি যে আপনার মূল্যবান সময় ব্যয় করে ক্রেতাদের কল দিবেন।

তারপর ক্রেতারা আসলে আপনার মার্কেটিং এর পর কেমন রেসপন্স করছে সেটি আপনি যাচাই করতে পারবেন।

আর এই কাজটি করার জন্য সবার প্রথমে আপনাকে কল দেওয়ার সংখ্যা জানতে হবে। তারপর সেই কল দেওয়ার পরিমান অনুযায়ী আপনার প্রোডাক্ট সেল হওয়ার পরিমান যাচাই করতে হবে।

আর যখন আপনি উক্ত কাজটি করতে পারবেন। তারপর আপনি আপনার ইনপুট অনুযায়ী কতটুকু আউটপুট পাচ্ছেন তা জেনে নিতে পারবেন। 

টেলিমার্কেটিং এর উদাহরন 

যখন আপনি আপনার প্রোডাক্ট সেল করার জন্য কোনো ধরনের মার্কেটিং করতে চাইবেন।

তখন আপনাকে একটি বিষয় সম্পর্কে জেনে নিতে হবে। সেটি হলো, গোটা বিশ্বের মধ্যে আর কোন কোন কোম্পানি আপনার মতো মার্কেটিং এর কাজ করেছে।

এর পাশাপাশি উক্ত মার্কেটিং করে তারা কতটুকু সফলতা পেয়েছে সেটিও আপনাকে জানতে হবে। তো যদি আপনি গোটা বিশ্বের মধ্যে লক্ষ্য করে দেখেন।

আপনার জন্য আরোও আছে…

তাহলে আপনি এমন অনেক কোম্পানির নাম জানতে পারবেন। যারা মূলত দীর্ঘদিন থেকে এই ধরনের টেলিমার্কেটিং এর সাথে যুক্ত আছে। 

আর সেই কোম্পানি গুলোর নাম নিচে উল্লেখ করা হলো। যেমন, 

  1. SCIENCE Technologies
  2. Helpware
  3. Simply Contact
  4. SupportYourApp
  5. Unity Communications
  6. Intelegencia
  7. XACT
  8. Remote CoWorker
  9. Valoris Center

যদিওবা উপরে উল্লেখিত কোম্পানি গুলো পৃথিবীর বিভিন্ন দেশের। তবে এবার আমি আপনাকে আমাদের বাংলাদেশের কিছু টেলি মার্কেটিং কোম্পানির সাথে পরিচয় করিয়ে দিবো।

যারা মূলত দীর্ঘ দিন থেকে এই ধরনের টেলিমার্কেটিং এর সাথে যুক্ত আছে। আর সেই কোম্পানি গুলোর নাম নিচে উল্লেখ করা হলো। যেমন, 

  1. ASL BPO
  2. Quantanite
  3. SkyTech Solutions
  4. Ignite Tech Solutions
  5. 360-supports
  6. TeleConsult Group (TCG)
  7. Impel Service & Solutions Limited (ISSL)
  8. Call Point Business Solutions
  9. RPSI Limited: TECH-TEAM

উপরের তালিকায় আপনি যেসব কোম্পানির নাম দেখতে পাচ্ছেন। মূলত এগুলো হলো আমাদের বাংলাদেশ এর মধ্যে থাকা টেলিমার্কেটিং কোম্পানি।

যারা দীর্ঘদিন থেকে উক্ত মার্কেটিং এর সাথে যুক্ত আছে। 

টেলি মার্কেটিং এর সুবিধা গুলো কি কি?

যেহুতু আজকের আলোচনা থেকে আমরা Telemarketing ki সে সম্পর্কে বিস্তারিত জানলাম।

সেহুতু এবার আমাদের আরো একটি বিষয় জেনে নিতে হবে। সেটি হলো, টেলি মার্কেটিং এর সুবিধা গুলো কি।

এর কারণ হলো, যখন আপনি টেলি মার্কেটিং করবেন। তখন আপনি বিভিন্ন দিক থেকে সুবিধা ভোগ করতে পারবেন।

আর এবার আমি আপনাকে সেই টেলি মার্কেটিং এর সুবিধা গুলো সম্পর্কে বলবো। যেগুলো নিচে ধাপে ধাপে উল্লেখ করা হলো।

ক্রেতাদের সাথে সরাসরি যোগাযোগ করা যায়

আপনি যখন টেলিমার্কেটিং করবেন, তখন আপনি ক্রেতাদের সাথে সরাসরি যোগাযোগ করতে পারবেন।

যার ফলে আপনি উক্ত মার্কেটিং এর মাধ্যমে তাদের প্রোডাক্ট সম্পর্কে বিস্তারিত বলতে পারবেন।

সেই সাথে আপনার প্রোডাক্ট ব্যবহার করার ফলে তারা কোনো সমস্যায় পড়েছে কিনা তা জেনে নিতে পারবেন।

এর পাশাপাশি কোনো একটি প্রোডাক্ট সম্পর্কে ক্রেতাদের বিভিন্ন ধরনের প্রশ্ন থাকতে পারে।

আপনি টেলি মার্কেটিং করার মাধ্যমে সেই প্রশ্ন গুলো সরাসরি শুনতে পারবেন। আর প্রয়োজনে তাদের প্রশ্নের সঠিক উত্তর প্রদান করতে পারবেন। 

টেলি মার্কেটিং অনেক দ্রুত ও কার্যকরী মাধ্যম 

সত্যি বলতে যখন আপনি টেলিমার্কেটিং করবেন। তখন আপনি আপনার মার্কেটিং করার কাজ গুলো খুব দ্রুততার সাথে করতে পারবেন।

কেননা, আপনি একই সময়ে একাধিক ক্রেতার সাথে কথা বলতে পারবেন।

যার ফলে আপনার কোম্পানির প্রচার করার কাজটিও অনেক দ্রুততার সাথে সম্পন্ন হবে। এছাড়াও আপনার কোম্পানির প্রোডাক্ট বিক্রি হওয়ার সম্ভাবনাও বেড়ে যাবে। 

টেলি মার্কেটিং অন্যান্য মার্কেটিংয়ের তুলনায় সস্তা

অনেকেই হয়তবা মনে করবেন যে, টেলিমার্কেটিং করতে অনেক বেশি টাকার দরকার হয়। তো যদি আপনি এমনটা মনে করে থাকেন, তাহলে আপনার ধারনা সম্পূর্ণ ভুল।

কেননা, আপনি খুব কম পরিমান অর্থ ব্যয় করে টেলিমার্কেটিং এর কাজ করতে পারবেন।

এক্ষেত্রে আপনাকে একটি কল সেন্টার যুক্ত করতে হবে। আর সেই কল সেন্টারে কিছু অভিজ্ঞ ও প্রশিক্ষিত কর্মীর প্রয়োজন হবে।

যাদের মাধ্যমে আপনি টেলিমার্কেটিং এর কাজটি পরিচালনা করতে পারবেন। আর উক্ত কাজ গুলো করতে আপনার খুব বেশি টাকা খরচ করার প্রয়োজন পড়বে না।

তো এগুলো হলো টেলি মার্কেটিং এর সুবিধা। আর যদি আপনি আপনার ব্যবসার প্রচার ও প্রসার এর ক্ষেত্রে এই সুবিধা গুলো পেতে চান।

তাহলে আপনাকে অবশ্যই টেলি মার্কেটিং করতে হবে। 

টেলি মার্কেটিং এর অসুবিধা কি?

যখন আপনি টেলি মার্কেটিং করবেন, তখন সুবিধার পাশাপাশি বেশ কিছু অসুবিধা লক্ষ্য করতে পারবেন।

আর আমাদের সেই অসুবিধা গুলো সম্পর্কে অবশ্যই সঠিক ধারনা রাখা উচিত। তো টেলি মার্কেটিং এর অসুবিধা গুলো নিচে উল্লেখ করা হলো।

০১ – গ্রাহকদের বিরক্তি 

সত্যি বলতে সবসময় সব মানুষের মন মানসিকতা ভালো থাকেনা। এখন আপনি যদি খারাপ পরিস্থিতিতে থাকা মানুষকে কল দিয়ে আপনার প্রোডাক্ট সম্পর্কে বলেন।

তাহলে কিন্তুু সেটা তাদের কাছে বিরক্তির কারন হয়ে দাঁড়াবে।

আবার অনেক মানুষ আছেন, যারা মূলত টেলি মার্কেটারদের সাথে কথা বলতে চায়না।

যার ফলে এটা আপনার কাছেও অনেকটা বিরক্তির কারণ হয়ে দাঁড়াবে। 

০২- জটিলতা ও সময়সাপেক্ষ কার্যক্রম 

একটা সাধারন বিষয় ভেবে দেখুন। সবার প্রথমে আপনাকে আপনার টার্গেট করা কাস্টমারদের খুজে নিতে হবে।

তারপর আপনাকে তাদের মোবাইল নাম্বার সংগ্রহ করতে হবে। আর তখন আপনাকে তাদের মোবাইল নাম্বারে কল দিয়ে কথা বলতে হবে।

তো এই যে সবার শুরুতে আপনাকে ডেটা কালেক্ট করতে হবে। মূলত এই কাজ গুলো করার জন্য আপনাকে প্রচুর পরিমান সময় ব্যয় করতে হবে।

এছাড়াও কল সেন্টার সেটআপ করা, সেই সেন্টারে দক্ষ কর্মীর নিয়োগ দেওয়া ইত্যাদি কাজের ক্ষেত্রেও আপনাকে অনেক সময় ব্যয় করতে হবে। 

০৩- ব্যয় বাড়ার সম্ভাবনা

শুরুর দিকে আপনি হয়তবা স্বল্প পরিসরে টেলিমার্কেটিং করতে পারবেন। কিন্তুু যখন আপনার ব্যবসার পরিধী বৃদ্ধি পাবে।

তখন আপনাকে কল সেন্টার আরো প্রসারিত করতে হবে। সেইসাথে উক্ত সেন্টারে আরো দক্ষ জনবল নিয়োগ দিতে হবে। আর তাদের বেতন বাড়ানোর ঝামেলা তো থাকবেই।

যার কারণে শুরুতে এই ধরনের মার্কেটিং করতে তেমন ব্যয় করতে না হলেও। পরবর্তী সময়ে আপনাকে উক্ত মার্কেটিং করার জন্য আরো বেশি অর্থ খরচ করতে হবে।

যার ফলে টেলিমার্কেটিং এর ব্যয় তুলনামূলক ভাবে বেড়ে যাবে। 

০৪ – কাস্টমারদের থেকে প্রতিক্রিয়া না পাওয়া

টেলি মার্কেটিং করার সময় আপনি মোট যতগুলো কল করবেন। তার মধ্যে অনেক কল গ্রাহকরা রিসিভ করবে না।

আবার অনেক কাস্টমার আপনার কল রিসিভ করে কথা বলার পরও তাদের কাছ থেকে কোনো প্রতিক্রিয়া পাবেন না।

যার ফলে আপনি যে সময় ও অর্থ ব্যয় করে মার্কেটিং করলেন। সেখান থেকে আপনি কোনো ধরনের বেনিফিট পাবেন না। 

কল সেন্টার ও টেলি মার্কেটিং এর মধ্যে পার্থক্য কি

কল সেন্টার এবং টেলি মার্কেটিং দুটিই টেলিফোন ব্যবহার করে গ্রাহকদের সাথে যোগাযোগ করার একটি উপায়। তবে, তাদের মধ্যে কিছু গুরুত্বপূর্ণ পার্থক্য রয়েছে।

কল সেন্টার হল একটি কেন্দ্র যেখানে গ্রাহক সার্ভিস, বিক্রয় বা অন্যান্য উদ্দেশ্যে টেলিফোন কল পরিচালনা করা হয়। কল সেন্টারগুলি বিভিন্ন ধরনের ব্যবসা দ্বারা পরিচালিত হতে পারে, ছোট থেকে বড়।

আপনি আরোও দেখে নিন…

টেলি মার্কেটিং হল একটি কেনাকাটার কৌশল যেখানে একজন বিক্রয় প্রতিনিধি বা টেলি সেলসপার্সন সম্ভাব্য গ্রাহকদের সাথে টেলিফোনে যোগাযোগ করে।

টেলি মার্কেটিং এর লক্ষ্য হল নতুন গ্রাহকদের আকর্ষণ করা, বিদ্যমান গ্রাহকদের সাথে সম্পর্ক গড়ে তোলা এবং প্রডাক্ট বা সার্ভিস গুলি বিক্রি করে।

Article Information Source from Wikipedia.com

FAQs
টেলিসেল অর্থ কি

টেলিসেল অর্থ হল টেলিফোন ব্যবহার করে বিক্রয় করা। এটি একটি কার্যকর কেনাকাটার কৌশল হতে পারে যা নতুন গ্রাহকদের আকর্ষণ করতে এবং বিদ্যমান গ্রাহকদের সাথে সম্পর্ক গড়ে তুলতে সাহায্য করতে পারে।

টেলিসেলস কি কল সেন্টার

টেলিসেলস কল সেন্টার এর একটি অংশ হতে পারে। একটি কল সেন্টারে, টেলিসেলস প্রতিনিধিরা নতুন গ্রাহকদের আকর্ষণ করার জন্য বা বিদ্যমান গ্রাহকদের সাথে সম্পর্ক গড়ে তোলার জন্য টেলিফোন ব্যবহার করে।

কল সেন্টার এজেন্ট এর কাজ কি

কল সেন্টার এজেন্টদের বিভিন্ন ধরনের কাজ করতে হয়, যার মধ্যে রয়েছে: গ্রাহকদের প্রশ্নের উত্তর দেওয়া, গ্রাহকদের সমস্যা সমাধান করা, বিক্রয় প্রক্রিয়া পরিচালনা করা এবং গ্রাহক সন্তুষ্টি নিশ্চিত করা।

একজন ভালো টেলিমার্কেটিং কি করতে হয়

একজন ভালো টেলিমার্কেটিং এজেন্টের যা দক্ষতা এবং গুণাবলী থাকা উচিত: যোগাযোগ দক্ষতা, সম্পর্ক গড়ে তোলার দক্ষতা, প্রশ্ন জিজ্ঞাসা করার দক্ষতা, চাপের মধ্যে কাজ করার দক্ষতা।

একজন ভালো টেলিমার্কেটিং এজেন্টের সফল হওয়ার জন্য এই দক্ষতা এবং গুণাবলী অপরিহার্য।

টেলিমার্কেটিং প্রথম কবে চালু হয়

টেলিমার্কেটিং প্রথম 1960 চালু হয়েছিল। এটি তখন থেকে একটি জনপ্রিয় কেনাকাটা করার কৌশল হয়ে উঠেছে।

টেলি মার্কেটিং কি সহজ কথায়

টেলি মার্কেটিং হল একটি কেনাকাটা কৌশল যেখানে একজন বিক্রয় প্রতিনিধি টেলিফোন ব্যবহার করে গ্রাহকদের সাথে কথা বলে তাদের পণ্য কেনার জন্য রাজি করার চেষ্টা করে।

আপনার জন্য আমাদের কিছুকথা

প্রিয় পাঠক, আজকের আলোচনাতে আমি আপনাকে টেলিমার্কেটিং সম্পর্কে বিস্তারিত বলেছি। তো এরপরও যদি আপনার টেলিমার্কেটিং সম্পর্কে আরো কিছু জানার থাকে।

তাহলে আপনার প্রশ্নটি নিচে কমেন্ট করবেন। 

আর্টিকেলের এই টিপসগুলি অনুসরণ করে, আপনি আপনার মার্কেটিং আরও কার্যকর করে তুলতে এবং আপনার ব্যবসার জন্য আরও বেশি গ্রাহককে আকর্ষণ করতে পারবেন

আর এতক্ষন ধরে Bangla It Blog এর সাথে থাকার জন্য আপনাকে অনেক অনেক ধন্যবাদ। ভালো থাকবেন, সুস্থ থাকবেন।  

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Scroll to Top